শিশুর ডায়রিয়া: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুদের ডায়রিয়া বাংলাদেশের অভিভাবকদের জন্য একটি পরিচিত এবং উদ্বেগের বিষয়। বছরের যেকোনো সময়েই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে বর্ষাকালে কিংবা যখন নিরাপদ পানি ও খাবার নিশ্চিত না করা হয়। এই অসুখটি শিশুর শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

শিশুর ডায়রিয়া: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

অনেক সময় অভিভাবকরা বুঝে উঠতে পারেন না কখন ঘরে চিকিৎসা দেবেন, আর কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এই ব্লগে আমরা সহজ ভাষায় তুলে ধরছি শিশুর ডায়রিয়ার কারণ, লক্ষণ, প্রাথমিক চিকিৎসা, এবং কখন হাসপাতালে যেতে হবে সেই বিষয়গুলো।

আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি অংশ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ডাক্তারের পরামর্শ নিন: ০৯৬৬৬-৭৮৭৮০৬

বাচ্চাদের ডায়রিয়ার প্রধান কারণ সমূহ

শিশুদের ডায়রিয়ার প্রধান কারণগুলো সাধারণত সংক্রমণজনিত হয়ে থাকে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী—তিনটি প্রধান উৎসই এই রোগের জন্য দায়ী হতে পারে। তবে অনেক সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বা খাদ্যাভ্যাসে সামান্য অবহেলাই বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চলুন দেখে নিই শিশুর ডায়রিয়ার পেছনে কোন কোন বিষয় ভূমিকা রাখে।

  • রোটা ভাইরাস: সবচেয়ে সাধারণ ভাইরাল কারণ, টিকা না নিলে ঝুঁকি বেশি।
  • দুষিত খাবার ও পানি: রাস্তার খাবার বা অপরিষ্কার পানির মাধ্যমে সংক্রমণ হয়।
  • অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ: শিশুর হাত বা খাওয়ার পাত্র পরিষ্কার না থাকলে।
  • অ্যান্টিবায়োটিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অপ্রয়োজনে বা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন।
  • নতুন খাবারের প্রতি অ্যালার্জি বা হজম সমস্যা।
শিশুর ডায়রিয়া বাড়ছে? জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ!

দেশের অভিজ্ঞ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে এখনই জেনে নিন করণীয়।

পরামর্শ পেতে কল করুন: ০৯৬৬৬-৭৮৭৮০৬

কীভাবে বুঝবেন শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে?

প্রথমেই লক্ষণ দেখে নিশ্চিত হতে হবে এটি সাধারণ পেটের সমস্যা না ডায়রিয়া। শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ লক্ষ্য করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। নিচে ডায়রিয়ার কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো।

  • ঘন ঘন ও তরল মলত্যাগ (দিনে ৩ বারের বেশি)
  • পেট ব্যথা বা মোচড়ানো অনুভব করা
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া (পানিশূন্যতার লক্ষণ)
  • শিশুর অস্বাভাবিক শান্ত বা দুর্বল হয়ে পড়া
  • জ্বর ও বমি (বিশেষ করে ভাইরাল ডায়রিয়ায়)

শিশুর ডায়রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা

শিশুর ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে ঘরেই অনেক সময় কার্যকর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। তবে সঠিক নিয়ম না জানলে ক্ষতি হতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করা এবং শিশুকে সজীব রাখা।

শিশুর ডায়রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা
  • ওআরএস সেবন করান: প্রতি পাতলা পায়খানার পর ৫০–১০০ মি.লি. ওআরএস খাওয়ানো জরুরি।
  • বুকের দুধ বা স্বাভাবিক খাবার চালিয়ে যান: দুধ বন্ধ করবেন না, বরং আরও ঘন ঘন খাওয়ান।
  • জিংক সাপ্লিমেন্ট: প্রতিদিন ১টি করে ১০ দিন পর্যন্ত (ডাক্তারের পরামর্শে)।
  • পানিশূন্যতা হলে লবণ-চিনির স্যালাইন তৈরি করুন: ১ লিটার ফুটানো পানিতে ১ চা চামচ লবণ ও ৮ চা চামচ চিনি মিশিয়ে দিন।

কখন ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি?

সব ডায়রিয়া নিজে নিজেই সেরে যায় না। কিছু লক্ষণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বিশেষ করে যদি ডায়রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হয় কিংবা শিশুর দেহে পানিশূন্যতার মাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে দেরি না করে হাসপাতালে যেতে হবে।

  • ডায়রিয়া তিন দিন বা তার বেশি সময় ধরে চলতে থাকলে
  • শিশুর প্রস্রাব কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে
  • মলে রক্ত দেখা গেলে
  • বমির পরিমাণ বেড়ে গেলে এবং মুখ একেবারে শুকিয়ে গেলে
  • শিশু যদি ৬ মাসের কম বয়সী হয়

শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে যা করবেন

ডায়রিয়া প্রতিরোধে অভিভাবকদের কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা খুবই জরুরি। শুধুমাত্র ওষুধ নয়, নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে শিশুর ডায়রিয়া অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।

শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে যা করবেন
  • বিশুদ্ধ পানি খাওয়ান (ফুটানো বা ফিল্টার করা)
  • রাস্তার খাবার খেতে দেবেন না
  • শিশুকে খেলাধুলার পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান
  • প্রতিটি শিশুকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রোটা ভাইরাসের টিকা দিন
  • পায়খানা বা ডায়াপার পরিবর্তনের পর ভালোভাবে হাত ধোয়া

আপনার শিশুর সুস্থতার জন্য শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন

আপনার শিশুর ডায়রিয়া যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আসে, বা আপনি যদি নিশ্চিত না হন কী করণীয়—তাহলে দেরি না করে একজন অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

ডা. সালাহউদ্দিন মাহমুদ বাংলাদেশের একজন অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ। শিশুর ডায়রিয়া, সংক্রমণ, পুষ্টি সমস্যা, হজম সমস্যা সহ যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আপনি তাঁর সাথে সরাসরি পরামর্শ নিতে পারেন।

যোগাযোগ করুন

প্রাসঙ্গিক ৫টি প্রশ্ন ও উত্তর

সাধারণ ভাইরাল ডায়রিয়া ৩–৫ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত ডায়রিয়া ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

সহজপাচ্য খাবার যেমন সেদ্ধ খিচুড়ি, কলা, দই, নরম ভাত খাওয়ানো যায়। বুকের দুধ অব্যাহত রাখতে হবে।

মুখ শুকিয়ে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, এবং শিশু কাঁদলেও চোখে পানি না আসা—এসব পানিশূন্যতার লক্ষণ।

১ লিটার ফুটানো ঠান্ডা পানিতে ১ চা চামচ লবণ এবং ৮ চা চামচ চিনি মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন।

রোটা ভাইরাসের টিকা সাধারণত শিশুর ৬ সপ্তাহ বয়সের পর থেকে ১৫ সপ্তাহের মধ্যে শুরু করা হয় এবং ৩টি ডোজের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

Call Receptionist
Call for Appointment
Popular Diagnostic Centre Ltd. (Shyamoli)
CTA Phone Icon 09666-787806
For More Information
CTA Phone Icon 01339364083
Make An Appoinment
Arrow